facebook icon

সংস্কার কমিশনের সব সুপারিশ এখনই বাস্তবায়নের জন্য নয়: আলী রীয়াজ

ঢাবি প্রতিনিধি  প্রকাশ: 22 June 2025, 09:06 PM , আপডেট: 24 June 2025, 01:48 PM
অধ্যাপক আলী রীয়াজ
অধ্যাপক আলী রীয়াজ   © টিডিসি

সংস্কার কমিশনগুলোর রিপোর্ট শুধু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে বাস্তবায়ন করার জন্য করা হয়নি বলে মন্তব্য করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, কিছু বিষয় এ সরকার করছে। কিছু বিষয় রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ঐকমত্যের ভিত্তিতে বাস্তবায়িত হবে। বাকিগুলো ভবিষ্যতে যারা দেশ পরিচালনা করবে তাদের জন্য পথনির্দেশ তৈরি করে দেওয়ার জন্য। সবগুলো সংস্কার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে হবে সংস্কার কমিশনগুলো গঠনের উদ্দেশ্য এটা নয়। রবিবার (২২ জুন) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে দুই দিনব্যাপী “ফার্স্ট পলিটিক্যাল সায়েন্স কনফারেন্স” এর কী-নোট স্পিস শেষে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। 

আলী রীয়াজ বলেন, স্বৈরশাসক যেকোনো ধরনের অসন্তোষ, যেমন ভিন্নমত ও বিরোধীদল দমন করে শাসন ব্যবস্থায় স্থিতিশীলতা বজায় রাখে। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ভিন্নমত প্রকাশ পায়। যেটা অনেকক্ষেত্রে অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি করে। যেটাকে বলা হয় অটোক্রেটিক নস্টালজিয়া। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে দুইটি প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করা বেশি কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। একটি বিচার বিভাগ এবং অন্যটি সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনী। দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসন এই দুই প্রতিষ্ঠানকে দূর্বল করে দেয়। অনেকসময় এই প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিবিপ্লবের মাধ্যমে পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি করে। যেমনটা আমরা বিগতে বছরগুলোতে মধ্যপ্রাচ্যে দেখেছি। 

এ ছাড়াও, পতিত শাসকের সমর্থকরা ট্রানজিশনাল সময়ে অস্থিরতা তৈরি করে, যা গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্থিতিশীল রাখা শুধু অন্তবর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নয়। বরং রাজনৈতিক দলগুলোরও দায়িত্ব। কারণ নিকট ভবিষ্যতে রাজনৈতিক দলগুলো এসব প্রতিষ্ঠানের ওপর ভর করে শাসনকার্য পরিচালনা করবে।

তিনি বলেন, অনেক সময় যেসব সরকার ক্ষমতা হারিয়েছে, তাদের সমর্থকেরা ইচ্ছাকৃতভাবে গণতান্ত্রিক পরিবর্তন আটকে দিতে চায় এবং গণতন্ত্রকে দুর্বল করার চেষ্টা করে। তারা মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেয়। যদি সরকার সত্য তথ্য দিয়ে এর জবাব না দিতে পারে এবং কিছুটা স্থিতিশীলতা বা সদিচ্ছা দেখাতে না পারে, তাহলে এটি একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। এই অভিজ্ঞতা থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি। দেখা গেছে, ৬০ শতাংশ দেশ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরে যেতে ব্যর্থ হয়েছে, আর ৪০ শতাংশ দেশ সফল হয়েছে। যেখানে এসব সমস্যা সঠিকভাবে মোকাবিলা করা গেছে, সেখানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়েছে। আর যেখানে মোকাবিলা করা যায়নি, সেখানে আবার পিছিয়ে যাওয়া বা গণতন্ত্র থেকে সরে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

তিনি আরো বলেন, জুলাই-এর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর আমরা এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছি। গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে এসময় সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভাজন দূর করে আমাদের একযোগে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

শ্যাডো রিফর্ম কমিশন, শ্যাডো ন্যাশনাল কনসেনসাস কমিশন এবং পলিটিক্যাল অ্যান্ড পলিসি সায়েন্স রিসার্চ ফাউন্ডেশনের যৌথভাবে কনফারেন্সটি আয়োজন করেছে। এর আগে, দুপুর আড়াইটায় কনফারেন্সে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান।

School থেকে আরও পড়ুন

ads
সর্বশেষ সংবাদ