রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে বান্ধবীকে শার্ট-ক্যাপ পরিয়ে শিক্ষার্থীর রাত্রিযাপন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলে শার্ট ও ক্যাপ পরিয়ে বান্ধবীকে নিয়ে রাত্রিযাপন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। গত ৪ জুন শহীদ হবিববুর রহমান হলের ১৫৩ নম্বর রুমে এই ঘটনা ঘটে।
বান্ধবীকে নিয়ে হলে থাকা শিক্ষার্থীর নাম মো. নাজমুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী। ছেলেটির বাসা মাদারীপুর। ওই নারী শিক্ষার্থীও একই বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দুই ছাত্র জানান, ৪ জুন ভোররাতে তাঁরা বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এবং হলের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় দেখতে পান, এক ছাত্র সাইকেলে চড়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন এবং তার পেছনে স্কুলশার্ট ও মাথায় ক্যাপ পরা একজন মেয়ে বসা। এমন অস্বাভাবিক দৃশ্য দেখে তাঁরা ছেলেটিকে থামানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু দ্রুতগতির সাইকেলটিকে ধরা সম্ভব হয়নি। দারোয়ানও বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তিনিও ব্যর্থ হন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র-জার্মানি থেকে ১৪ কার্গো বিমানে অস্ত্র এলো ইসরায়েলে
ঘটনার বিষয়টি স্বীকার করে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘গত তিন তারিখ ছিল আমার জন্মদিন। কেক কাটতে করতে রাত হয়ে যায়। সাদিয়ার মেস থেকে তাকে সেদিনই চলে যেতে বলা হয়েছিল। সে মেসে যেতে পারবে না বলে আমাকে হলে রাখার জন্য অনুরোধ করে। আমি মানবিক কারণে ওকে হলে নিয়ে আসি এবং সকালে সে চলে যায়। পরে হয়তো কেউ আমাদের দেখে ফেলে।’
তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে প্রভোস্ট স্যার আমাকে ডেকেছিলেন। আমি তাকে সব খুলে বলেছি। তিনি আমাকে সিট বাতিলের সিদ্ধান্ত জানান এবং বলেন বিষয়টি জানাজানি হবে না।
এদিকে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, হলে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এটি একটি ভয়াবহ অপরাধ, এত বড় সাহস হয় কীভাবে? আমরা এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি এবং ওই ছাত্রকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করার দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে হল প্রাধ্যক্ষ, গেটম্যান ও সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে এমন গর্হিত কাজ কীভাবে ঘটল, তার সঠিক ব্যাখ্যা চাই।
আরও পড়ুন: নতুনবাজার সড়ক অবরোধ করে ইউআইইউ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হবিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. মো. মোতাহার হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি অবগত আছি এবং ঘটনাটিও সত্যি। হল প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। তার সিট বাতিল করা হবে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটি তার বিরুদ্ধে বাকি সিদ্ধান্ত নিবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন বলেন, এটা অবশ্যই সাংঘাতিক একটি ঘটনা। এমন ঘটনা যদি সত্যি হয়ে থাকে সেটা অনেক বড় অপরাধ। আমরা খোঁজ নিব, বিষয়টি সত্যি হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।