রাবি শিক্ষকের চেম্বারে ছাত্রী, ভিডিও করে চাঁদা দাবির অভিযোগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক সহযোগী অধ্যাপকের চেম্বারে নারী শিক্ষার্থীর অবস্থান ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অধ্যাপক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ অভিযোগ করেছেন, তাঁকে জিম্মি করে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছিল এবং তিনি ইতোমধ্যে তিন লাখ টাকা পরিশোধ করতে বাধ্য হয়েছেন।
রবিবার সকালে নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ তুলে ধরেন হেদায়েত উল্লাহ। তিনি জানান, ১১ মে সন্ধ্যায় ২০১৮-১৯ সেশনের এক নারী শিক্ষার্থী পড়াশোনার বিষয়ে কথা বলতে তাঁর চেম্বারে গেলে, হঠাৎ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, সাবেক শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব তাহমিদ, সাংবাদিক সিরাজুল ইসলাম সুমন ও সাজ্জাদ হোসেন সজীব চেম্বারে ঢুকে তাঁকে ও ছাত্রীকে জিম্মি করেন।
তাঁর অভিযোগ, অভিযুক্তরা দাবি করেন ওই নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে তাঁর ‘অনৈতিক সম্পর্ক’ রয়েছে এবং চেম্বারে অবস্থানের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তাঁকে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দিতে বাধ্য করা হয়। হেদায়েত উল্লাহ জানান, প্রথম দিনে এক লাখ এবং পরদিন আরও দুই লাখ টাকা দেন তিনি।
তিনি দাবি করেন, ভিডিওটিতে কোনো আপত্তিকর দৃশ্য না থাকলেও ঘটনাকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে তাঁর সম্মানহানি করার চেষ্টা করা হয়েছে।
এর আগের দিন শনিবার ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলন করে ওই নারী শিক্ষার্থীও অভিযুক্ত চারজনের বিরুদ্ধে একই ধরনের চাঁদাবাজির অভিযোগ করেন।
অন্যদিকে, অভিযুক্ত সাংবাদিক সুমন ও সজীব পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তারা সাংবাদিক হিসেবে ঘটনাস্থলে যান এবং দরজা খোলা পেয়ে চেম্বারে ঢোকেন। তাদের দাবি, টেবিলের নিচে লুকিয়ে থাকা ছাত্রীকে শিক্ষক নিজেই বের করে আনেন এবং ছাত্রী অনুরোধ করেন ভিডিও প্রকাশ না করতে। কোনো চাঁদা দাবি করেননি তারা।
তবে চাঁদা দাবির বিষয়ে একটি ফোনালাপের অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে হেদায়েত উল্লাহ ও নাজমুস সাকিবের কথোপকথনে টাকার বিষয়ে আলোচনা এবং অন্যদের না আনার অনুরোধ শোনা যায়।
তবে অভিযুক্ত আতাউল্লাহ ও সাকিবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘বিষয়টি তদন্তাধীন। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা কোনো সিদ্ধান্তে যাব না।’