facebook icon

চুয়েট ক্যাফেটেরিয়ায় একচেটিয়া ব্যবসা, খাবারের মান নিয়ে শিক্ষার্থীদের অসন্তোষ

সাইকা শুহাদা, চুয়েট প্রকাশ: 21 May 2025, 03:05 PM , আপডেট: 26 May 2025, 11:14 AM
ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) ক্যাফেটেরিয়া
ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) ক্যাফেটেরিয়া   © সংগৃহীত

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) ক্যাম্পাসে খাবার সরবরাহকারী একক প্রতিষ্ঠান ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) ক্যাফেটেরিয়া। ২০২৩ সালের ২১ মে প্রতিষ্ঠানটি চালু করা হয়। তবে দুই বছর পার করলেও সেবায় এখনো উল্লেখযোগ্য প্রশংসা কুড়াতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। এখানে খাবারের মান, দাম ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে নানা অভিযোগ উঠেছে। তবু দেখা মেলেনি টেকসই সমাধানের।

সম্প্রতি শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে অসন্তোষ আরও বেড়ে চলেছে টিএসসি ক্যাফেটেরিয়া নিয়ে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রে অবস্থিত এই একটি মাত্র ক্যাফেটেরিয়া সক্রিয় রয়েছে, যা পূর্ণকালীন খাবার সরবরাহ করে। আগে কেন্দ্রীয় এলাকায় চালু থাকা দুটি ক্যানটিন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এই ক্যাফেটেরিয়ার ওপর নির্ভরতা অনেক গুণ বেড়ে যায়। যে কারণে প্রতিষ্ঠানটি মনোপলি ব্যবসা করার সুযোগ পায় বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, নতুন প্রকল্প তৈরির অজুহাতে ক্যাফেটেরিয়া চালুর ছয় মাসের মধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয় শিক্ষার্থীবান্ধব ১ ও ২ নম্বর ক্যানটিন। তবে দেড় বছর পার হলেও নতুন প্রকল্প তো দূরের কথা, স্থাপনা পর্যন্ত ভাঙা হয়নি এখনো। তাহলে কি ক্যাফেটেরিয়ার ব্যবসার পথ সুগম করতেই নেওয়া হয়েছিল এমন পদক্ষেপ?

আরও পড়ুন : তিতুমীরের ছাত্রাবাস উদ্বোধনের আগেই নষ্ট দরজা-চেয়ার-টেবিল, খসছে পলেস্তারা

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের অনুপস্থিতিতে প্রতিযোগিতাহীন পরিবেশ তৈরি হয়েছে, যা সেবার মান এবং ব্যবহারকারীদের সন্তুষ্টি উভয় ক্ষেত্রেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, খাবারের গুণগত মান পূর্বের তুলনায় অনেকটাই কমে গেছে। সম্প্রতি একজন শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিযোগ করেন, ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মধ্যে প্লাস্টিক-জাতীয় বস্তু পাওয়া গেছে। এ ছাড়া খাবারের পরিমাণ দাম অনুযায়ী কম এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিক থেকেও নানা সীমাবদ্ধতা রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ক্যাফেটেরিয়ার পরিবেশ নিয়ে অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরেই।

চুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অনুরাশা রাফানা বলেন, ‘ক্যাফেটেরিয়ার ওয়াশরুম ও বসার স্থান নিয়মিতভাবে পরিষ্কার রাখা হয় না। খাবারের মেনুতে বৈচিত্র্য নেই এবং মান নিয়ন্ত্রণের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। উপরন্তু পানির বোতল ও গ্লাসেও ময়লার স্তর জমে থাকতে দেখা যায়।’

আরও পড়ুন : শেনজেনভুক্ত দেশে ভিসা প্রত্যাখ্যানে বাংলাদেশ শীর্ষ তিনে

পুরকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নুসরাত খানম বলেন, ‘প্রতিযোগিতা না থাকায় প্রতিষ্ঠানটি ভোক্তাদের অভিজ্ঞতার প্রতি সাড়া দিচ্ছে না এবং কোনো অভিযোগের পরও কার্যকর পরিবর্তন দেখা যায় না। একক নিয়ন্ত্রণের বদলে প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি করা গেলে খাবারের মানোন্নয়নের পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের সন্তুষ্টি নিশ্চিত করা সম্ভব হতো।’

এ ব্যাপারে চুয়েট প্রশাসনের ভূমিকা জানতে চাইলে চুয়েটের ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মুক্তার হোসাইন বলেন, ‘আমরা সব সময়ই ক্যাফেটেরিয়ার সেবা তদারকি করার চেষ্টা করি। প্রয়োজনে শাস্তির ব্যবস্থাও করি। তবে বর্তমান পরিচালক ও কর্মচারীদের সেবায় ঘাটতি আছে তা অনস্বীকার্য। তবু আমরা চেষ্টা করি সব সময় শিক্ষার্থীবান্ধব সেবা যাতে দেওয়া হয়।’

ক্যাফেটেরিয়ার নতুন ইজারা বিজ্ঞপ্তি কবে দেওয়া হবে, এই সম্পর্কে জানতে চাইলে ড. মুক্তার হোসাইন বলেন, ‘এখনকার পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান সারা এসোসিয়েট। আমাদের নোটিশের ভিত্তিতে টিএসসি ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনার জন্য ছয়টি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছিল। তাদের মধ্য থেকে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে নতুন প্রতিষ্ঠান, কস্তুরি রেস্টুরেন্টকে আগামী এক বছর ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আশা করছি ঈদের পর থেকেই তারা দায়িত্ব গ্রহণ করলে এসব সমস্যার অনেকটাই সমাধান হবে।’

ads
সর্বশেষ সংবাদ