আজকের মধ্যে ডাকসুর তফসিল ও নির্বাচন কমিশন ঘোষণা চায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ

আজকের মধ্যে ডাকসুর তফসিল ও নির্বাচন কমিশন ঘোষণার দাবি জানিয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ। দাবি না মানা হলে আরো কঠিন কর্মসূচির ঘোষণা দিবে বলে জানিয়েছে তারা।
শনিবার (২৪ মে) দুপুর ২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের সামনে এক অবস্থান কর্মসূচি পালন করে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যা বিচার, ডাকসুর তফসিল ও নির্বাচন কমিশন ঘোষণা এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে তারা।
এ সময় সংগঠনটির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্লোগান দেয়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য― ‘ডাকসু আমার অধিকার, রুখে দেয় সাধ্য কার’; ‘ডাকসুর তফসিল, দিতে হবে দিয়ে যাও’; ‘গোলামি না ডাকসু, ডাকসু ডাকসু’; ‘গেস্টরুম না ডাকসু, ডাকসু ডাকসু’।
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বলেন, ‘ক্যাম্পাসকে নিরাপদ ও আমূল পরিবর্তন করা আমাদের প্রাণের দাবি ছিল। কিন্তু এই প্রক্টর ও প্রশাসন আমাদের কী দেখিয়েছিল? বিগত দিনে ক্যাম্পাসে যে পরিমাণ চুরি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি হতো এখন আরো বেশি হয়। কিন্তু এমনটা হওয়ার কথা ছিল না। আপনারা যে অঙ্গীকার নিয়ে এসেছেন তা পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন। আমরা আর কোন টালবাহানা আর গড়িমসি চাই না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আজকে এখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি তিনটা দাবি নিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গত নয় মাস যে প্রহসন করেছে আমাদের সাথে তার অবসান আজকে হতে হবে। আপনাদের (বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন) বলা হলে আপনারা বলেন, করতেছি করতেছি। আজকের দিনের মধ্যে ডাকসুর তফসিল ঘোষণা করতে হবে। আজকের দিনের মধ্যে ডাকসুর নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করতে হবে। আর কোন টালবাহানা নয়, আর কোন দেখাদেখি নয়। আবারও যদি টালবাহানা করেন ক্যাম্পাস অনিরাপদ হবে, আরেকজন সাম্য হত্যা হবে, আমি খুন হব। আমি খুন হওয়ার এগারো দিন পরেও প্রশাসন বলবে দেখতেছি দেখতেছি।’
গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বলেন, ‘আমার ভাই সাম্য যে খুন হলো তার এগারো দিন হয়ে গেল। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে প্রশাসন এবং রাষ্ট্রীয় যে প্রশাসন রয়েছে তাদের ব্যর্থতার উলঙ্গ চিত্র প্রদর্শিত হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে আজকে এগারো দিন পার হয়ে গেলেও সিআইডি, ডিবি, পুলিশ প্রশাসন পর্যন্ত কোন স্পষ্ট কিছু জানায়নি যে কি ঘটেছিল। সত্যিকার অর্থে কোন ঘটনা ঘটেছিল, কীসের ভিত্তিতে সাম্য খুন হয়েছিল, কারা খুনের সাথে জড়িত বিষয়ে বিন্দুমাত্র কোন ক্লু বের করতে পারে নাই। তার পক্ষে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জমায়েত হতে পারছে না। কারণ, শিক্ষার্থীদের কোন প্রতিনিধিত্ব নাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে বা যারা সাম্য হত্যাকাণ্ডকে পুঁজি করে বিভিন্ন ইকুয়েশন দিয়ে দলীয় স্বার্থ হাসিল করতে চায়, আল্টিমেটলি কী হয়? সাম্যরা খুন হয় কিন্তু খুনের বিচার পায় না। যদি শিক্ষার্থী প্রতিনিধি থাকতো, সাম্য প্রতিনিধি নির্বাচন করে দিয়ে যেতে পারতো। তাহলে সেই প্রতিনিধির দায়বদ্ধতার জায়গা থাকতো সাম্যের খুনের বিচার নিশ্চিত করা।’
আরও পড়ুন: এইচএসসি পরীক্ষা উপলক্ষে ৩৩ নির্দেশনা শিক্ষা বোর্ডের
গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মুখ্য সংগঠক হাসিব আল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাম্য হত্যার এগারো দিন পার হওয়ার পরেও নিরাপদ ক্যাম্পাসের সুনির্দিষ্ট কোন প্রস্তাবনা হাজির করতে পারে নাই। প্রশাসন খুনিদের এখন পর্যন্ত আইনের আওতায় আনতে ব্যর্থ হয়েছে। এমন হত্যাকাণ্ডের পরও আমাদের ক্যাম্পাস নিরাপদ নয়। এখনও অবাধ যানচলাচল এবং মাদকসেবী, ভবঘুরেরা ঘুরে বেড়াচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ডাকসুর মাধ্যমে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন করে তাদের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে হবে। ডাকসু আমাদের অধিকার। এটাকে রুখে দেওয়ার সাধ্য কারো নাই। তফসিল এবং নির্বাচন কমিশন ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। এ সময়ের মধ্যে দাবি মেনে নেওয়া না হলে কঠিন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’