সোহরাওয়ার্দী কলেজে ৩ মাসে শিক্ষার্থীদের একাধিক বাস আটকের ঘটনায় প্রশাসনের উদ্বেগ

রাজধানীর সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে গত তিন মাসে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ ও অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনটি পরিবহন সংস্থার বাস আটক করেছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি, পরিবহন কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে নিয়মিতভাবে স্টুডেন্ট ভাড়ায় বৈষম্য ও অসদাচরণ করা হচ্ছে।
জানা গেছে, এপ্রিল, মে ও জুন মাসে যথাক্রমে ইলিশ পরিবহন, সাভার পরিবহন এবং সর্বশেষ অনাবিল পরিবহনের একটি করে বাস আটক করেন কলেজ শিক্ষার্থীরা।
সবশেষ ঘটনাটি ঘটে চলতি জুন মাসে। একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মিথিলা সরকার জানান, তিন দিন আগে অনাবিল পরিবহনের একটি বাসে কলেজ আইডি কার্ড দেখানোর পরও তাকে স্টুডেন্ট ভাড়া না দিয়ে সাধারণ যাত্রীর ভাড়া আদায় করা হয়। শুধু তাই নয়, বাসের হেলপার তার সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এছাড়াও মে মাসে সাভার পরিবহনের দুইটি ভিন্ন বাসে দুইজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে পৃথক দুইটি ঘটনার জেরে ১০ টি বাস আটক করা হয়। পরবর্তীতে শিক্ষার্থী এবং বাস মালিক সমিতির সহায়তায় বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষ মিটমাট করে দেন।
গত তিন মাসে তিনটি ভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাস আটকের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে সোহরাওয়ার্দী কলেজ প্রশাসন। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সতর্কীকরণ করে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কলেজের শিক্ষার্থীরা কলেজের বাহিরে পরিবহন বা কোন সংস্থাপনায় ঘটে যাওয়া ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব কলেজে টেনে আনছে এবং কলেজ কর্তৃপক্ষকে বিচার করবার জন্য জোর প্রয়োগ করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, কলেজের বাহিরে সংগঠিত কোন দ্বন্দ্ব সুরাহা করবার দায়িত্ব কলেজ কর্তৃপক্ষের নয়। তাই কোন পরিবহন বা সংস্থার যানবাহন জব্দ করে কলেজ ফটকে বা গেইটে আনা যাবে না। এবং এসকল বেআইনি কর্মকাণ্ডের দায়িত্ব কলেজ কর্তৃপক্ষ বহন করবে না।
এদিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা। বাদশাহ মোস্তফা নামে একজন লিখেছেন, সঠিক সিদ্ধান্ত বুঝলাম তবে এতে করে কোন শিক্ষার্থী অন্যায়ভাবে হেনস্থার শিকার হলে এইসব শিক্ষার্থীরা কার কাছে যাবে কাদের কাছে দাবি জানাবে বিষয়টি বিস্তারিত বলবেন।
আরেকজন শিক্ষার্থী লিখেছেন, যেহেতু শিক্ষার্থী কলেজের তাই তারা কলেজে আশা যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করাও কলেজ প্রশাসনের দ্বায়িত্ব। তারপরও বিভিন্ন কারণে যেহেতু সকল শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবহন সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না তাই কলেজ প্রশাসনের উচিত ঢাকার বাস মালিক সমিতির সাথে আলোচনা করে কীভাবে সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। আর শিক্ষার্থীদেরও উচিত পরিবহনে চলাচলের সময় নিজেদের সংযম রাখা। সাধারণ বিষয় নিয়ে বাসের হেল্পার বা কন্ট্রাক্টরের সাথে ঝামেলায় না জড়ানো!
তবে এ বিষয়ে বাস মালিক পক্ষের কোন আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।