facebook icon

আবাসন সংকটে ঢাকা মেডিকেল, ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে

আশরাফ আন নূর প্রকাশ: 23 June 2025, 10:00 PM , আপডেট: 24 June 2025, 04:03 PM
ঢাকা মেডিকেল কলেজ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ   © ফাইল ফটো

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক)-এর শিক্ষার্থীরা বিকল্প আবাসন ও নিরাপদ থাকার ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ইতোমধ্যে কলেজ প্রশাসনের নির্দেশে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হলেও, শিক্ষার্থীরা হল ছাড়ার নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করেছেন। বর্তমানে ৬টি ব্যাচ একযোগে অধ্যয়ন করছে। প্রতি ব্যাচে ১২০ থেকে ১৩০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে যার মধ্যে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ জন হলে অবস্থান করে। মেইন বিল্ডিংয়ে মোট রুম রয়েছে প্রায় ১৩০টি। তবে ৪ তলার ৩৬টি রুম ব্যবহারের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে কারণ সেগুলোর অবকাঠামোগত অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ।

এছাড়া কলেজে আরও ৩টি ব্লক রয়েছে যেখানে মোট ৮০টি ছোট রুম আছে। এই রুমগুলোতে ২-৩ জন শিক্ষার্থী থাকা সম্ভব হলেও ধারণক্ষমতা খুবই সীমিত। বর্তমানে মেইন বিল্ডিংয়ের অধিকাংশ রুমে ৫ থেকে ৭ জন করে শিক্ষার্থী থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এমনকি ৪ তলায় এখনো কিছু রুমে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছেন যাদের শিফট করে অন্যত্র নেওয়ার মতো কোনো রুম এখনো বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় সদ্য ভর্তি হওয়া নতুন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো রুমই খালি নেই। ফলে তাদের আবাসনের ব্যবস্থা করা সম্পূর্ণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

গত ২১ জুন কলেজ কর্তৃপক্ষ এক নোটিশের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেন এবং অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘আমরা এখনো হল ছাড়ার নোটিশ প্রত্যাখ্যান করছি কারণ আমাদের থাকার কোনো বিকল্প ব্যবস্থা এখনো হয়নি।’

আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্ত উভয়ই কমেছে

আজ সোমবার (২৩ জুন) শিক্ষার্থী ও স্টাফদের পক্ষ থেকে আট সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আলোচনার জন্য গেছেন। শিক্ষার্থীরা বলছেন, মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে কিন্তু তারা এখনো কোনো ‘ক্লিয়ার রোডম্যাপ’ পাননি। 

এদিকে ঢাকা মেডিকেলের দ্বিতীয় বর্ষের ৮১ ব্যাচের ছাত্র সিয়াম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আবাসন সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। নতুন ব্যাচ আসছে কিন্তু তাদের থাকার জায়গা নেই। আমাদের ব্যাচের অনেকেই এখনো জায়গা পায়নি। অনেক জায়গায় গণরুমের মতো অবস্থা চলছে। মূল ভবনের ৪ তলায় পলেস্তর খসে পড়ছে। কিছু শিক্ষার্থী আহতও হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঈদের যে বন্ধ ছিল, আন্দোলনের কারণে সেটিও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মেডিকেলে নিয়মিত পড়াশোনার চাপ থাকে কিন্তু আন্দোলনের কারণে ক্লাস হচ্ছে না, পরীক্ষা পিছিয়ে যাচ্ছে। অথচ নভেম্বরেই আমাদের ফাইনাল পরীক্ষা।’

আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যু উভয়ই বেড়েছে

শিক্ষার্থীরা দাবি তুলেছেন, ‘আমরা দৃশ্যমান বাজেট চাই, চাই বিকল্প ও নিরাপদ আবাসন ব্যবস্থা। প্রশাসন টিনশেডের কথা বলছে যা আমাদের জন্য যথাযথ নয়। আমরা চাই এমন আবাসন যেখানে নিরাপদ মনে করে থাকা যায়। 

ঢাকা মেডিকেলের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘মূলত ভবনের পলেস্তর খসে পড়া এবং বিকল্প আবাসনের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন টিনশেড ব্যবস্থা করার কথা বলছে, কিন্তু শিক্ষার্থীরা তা মানতে নারাজ।’আজিমপুর সরকারি কলোনিতে একটি ২০ তলা ভবন বরাদ্দের দাবিও জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজের প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা. কামরুল আলম বলেন, ‘কলেজ আন্দোলন ও অ্যাকাডেমিক বিষয়ে আমার কাছে কোন আপডেট নেই।’ এরপর তিনি আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

Engineering and Science University থেকে আরও পড়ুন

ads
সর্বশেষ সংবাদ