অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে সিলেটের ওসমানী হাসপাতালের শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা

তিন দফা দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষানবিশ (ইন্টার্ন) চিকিৎসকেরা। রবিবার (১৫ জুন) বিকেলে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য এ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকবেন বলে জানান।
শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের অভিযোগ, তাদের জন্য নির্ধারিত ইন্টার্ন হলের অধিকাংশ কক্ষ এখনো বসবাসের অযোগ্য। কিছু কক্ষে এখনো সংস্কারকাজ চলমান। এর মধ্যেই প্রশাসনের নির্দেশে শিক্ষানবিশদের আবাসিক কক্ষ থেকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা এক নারী চিকিৎসককে মধ্যরাতে মাত্র চার ঘণ্টার মধ্যে কক্ষ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। নারী চিকিৎসকদের অনুপস্থিতিতে তাদের কক্ষের তালা ভেঙে মালামাল বাইরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা তিন দফা দাবি উত্থাপন করেছেন: ১. ঘটনাগুলোর দায় স্বীকার ও প্রকাশ্যে দুঃখ প্রকাশ, ২. ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যা ও দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ, ৩. বাসযোগ্য, স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ কক্ষ বরাদ্দ এবং বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দিষ্ট সময়সীমা ঘোষণা।
আরও পড়ুন: শিক্ষক নিয়োগে আর গণবিজ্ঞপ্তি দেবে না এনটিআরসিএ
নারী শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা আগে দিলরুবা হলে অবস্থান করলেও নতুন শিক্ষার্থীদের স্থান দিতে তাদের বিবি আয়েশা হলে স্থানান্তর করা হয়। তবে নতুন হলটি যথাযথভাবে প্রস্তুত নয় বলে দাবি তাদের। কক্ষগুলো অপরিচ্ছন্ন, দরজা-জানালা নেই, নেই পানির ব্যবস্থাও। এ অবস্থায় কক্ষ থেকে মালামাল বের করে দেওয়ার ঘটনাকে অপমানজনক ও মানবিকতার পরিপন্থী বলে মনে করছেন শিক্ষানবিশরা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে শিক্ষানবিশ চিকিৎসক মারদিয়া আলম জানান, হাসপাতালে সকাল আটটা থেকে দুপুর তিনটা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন শেষে কক্ষে ফিরে দেখেন, তার মালামাল কক্ষের বাইরে ফেলে রাখা হয়েছে। বাধ্য হয়ে তিনি একটি আবাসিক হোটেলে উঠেছেন।
বিষয়টি নিয়ে ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী। তিনি বলেন, শিক্ষানবিশদের আগেও একাধিকবার নির্ধারিত হলে উঠতে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অনেকেই তা মানেননি। আগামী ১৭ জুন কলেজের ২৪৯ জন নতুন শিক্ষার্থী আবাসিক হলে উঠবেন, তাই পুরোনো কক্ষ খালি করার বিকল্প ছিল না। চূড়ান্ত সতর্কতা দেওয়ার পরও অনেকে কক্ষ না ছাড়ায় বাধ্য হয়ে ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। তবে বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন বলেও জানান।
রাত ৯টা পর্যন্ত চলমান এ কর্মবিরতির বিষয়ে মেডিকেল কলেজ প্রশাসন এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে উভয় পক্ষকে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়েছেন সিনিয়র শিক্ষক ও কর্মকর্তারা।