১৫ বছরেও কাটেনি গোবিপ্রবির জলাবদ্ধতা সমস্যা, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

শিক্ষাকার্যক্রম চালুর পর থেকেই গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গোবিপ্রবি) অল্প বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। যা দীর্ঘদিনেও সমাধান করতে পারেনি প্রশাসন। প্রতি বছর চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকেই।
প্রতিবছরের ন্যায় এবছর গতকাল (১৭ জুন) থেকে টানা বৃষ্টি শুরু হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির সড়ক, নিউমার্কেট থেকে হল চত্বর ও অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনের সড়কে সবচেয়ে বেশি জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।
এ সমস্যার জন্য শিক্ষার্থীরা ড্রেনেজ ব্যবস্থার দুর্বলতা ও যথাযথ পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকা এবং কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করছেন। লাইব্রেরির সামনের সড়ক অংশে পানি জমে চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হওয়ায় বৃষ্টির দিনে লাইব্রেরিতে যাওয়া বা প্রয়োজনীয় কাজে বাইরে বের হওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ছাত্রদের হলের রাস্তা হয়ে উঠেছে চলাচলের অনুপযোগী।
আরও পড়ুন: ভাঙা নয়, মূল নকশায় ফিরছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ভাস্কর্যটি
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আইন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী নাইম আমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এই ভোগান্তির শেষ কোথায়? অল্প বৃষ্টি হলেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির সামনের অংশটা নদীতে পরিণত হয়! অথচ এটা নতুন কিছু না—বছরের পর বছর ধরে এই সমস্যা চলে আসছে। বারবার অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও প্রশাসনের টনক নড়ে না। কেন? আমাদের কি লাইব্রেরিতে না যেতেই বলা হচ্ছে? এটা কি তাহলে ধরে নেওয়া যাক যে, প্রশাসনের কেউ চান না ছাত্ররা লাইব্রেরিতে পড়তে আসুক? এই অব্যবস্থাপনাকে আর মেনে নেওয়া যায় না।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই এই জলাবদ্ধতা দ্রুত নিরসন করতে হবে। সাথে লাইব্রেরিতে একটি অভিযোগপত্র রেজিস্ট্রার খাতা রাখতে হবে, যেখানে আমরা আমাদের সমস্যাগুলো লিখে রাখতে পারি, প্রয়োজনীয় বই না থাকলে সেটার কথা জানাতে পারি।শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে, লাইব্রেরির পথ বন্ধ করে কেউ কখনো উন্নত বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে পারে না। তাই প্রশাসনের কাছে অনুরোধ দ্রুত সময়ের মধ্যে এই জলাবদ্ধতা নিরসন করতে হবে।’
স্বাধীনতা দিবস হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সুজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘নিউমার্কেট থেকে হল চত্বর পর্যন্ত রাস্তার যে বেহাল অবস্থা তা দেখে বোঝার উপায় নেই এটি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এরিয়া। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের চলাচলের পথ এতটা খারাপ হয় কেউ ভাবতে পারে? অথচ এই জলাবদ্ধতার সমস্যা বিশ্ববিদ্যালয়ের চালু থেকেই হয়ে আসছে। প্রতিবছর বর্ষা আসলেই আমাদের পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে। অথচ প্রশাসন যেন অন্ধ হয়ে বসে আছে। দেখেও না দেখার ভান করে আছে। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ও রাস্তা করতে না পারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চরম ব্যর্থতার পরিচয়।’
আরও পড়ুন: ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তিতে সুযোগ চান ১৭তম নিবন্ধনের আবেদনবঞ্চিতরা
অতিদ্রুত জলাবদ্ধতার সমাধান ও রাস্তা তৈরির দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান প্রশাসন আশা করছি এই বর্ষা শেষ হওয়ার আগেই দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিবেন। এবার পদক্ষেপ না নিলে এই বিষয়ে শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনে আন্দোলনে নামবে।’
এই বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখরের সাথে মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।
উপাচার্যকে না পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার এস.এম. এস্কান্দার আলীকে এই সমস্যার সমাধান কবে সমাধান হবে প্রশ্ন করলে তিনি উত্তরে বলেন,‘বাজেট নাহ আসা পর্যন্ত আমরা কিছু করতে পারতেছি নাহ।এ গুলো করার জন্য তো টাকা দরকার। আমাদের পক্ষ থেকে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে কিছু বরাদ্দ না পেলে আমরা কি করব?পাশ দিয়ে ড্রেন করতে হবে এর জন্য তো টাকা দরকার।’
তিনি আরও বলেন,‘কিছু ড্রেনের কাজ শুরু করা হইছিন কিন্তু সেই প্রজেক্টের কাজ এখন তো বন্ধ। তদন্ত কমিটি এসে প্রজেক্টের কাজ দেখে গেছে,আশা করা যাচ্ছে সেটা আবার শুরু হবে।এই ড্রেন গুলো সম্পন্ন হলে পানি যাওয়ার একটা রাস্তা হবে।আর নতুন করে ড্রেন করাটা বাজেট পেলে করতে পারব।’