বৃষ্টি নামলে শাবিপ্রবির রাস্তা হয়ে ওঠে মরণফাঁদ
- ২০ জুন ২০২৫, ১৬:৪৮

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) প্রধান সড়ক কিংবা আবাসিক হলের রাস্তা বর্তমানে মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই এসব রাস্তায় জমে যায় পানি, আর নিচে লুকিয়ে থাকা গভীর গর্তগুলো হয়ে ওঠে দুর্ঘটনার ফাঁদ। প্রতিনিয়তই শিক্ষার্থী, কর্মচারী ও স্থানীয় যাত্রীদের চলাচলে ঘটছে দুর্ঘটনা। কখনো বাইক উল্টে আহত, কখনো অটোরিকশা উল্টে পড়ছে কাদার ফাঁদে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরাণ হল মসজিদ সংলগ্ন সৈয়দ মুজতবা আলী হলের যাতায়াত রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে কর্দমাক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে বর্ষার সময় রাস্তার নিচে পানি জমে গর্ত আরও বড় হয়ে যাচ্ছে। অন্ধকারে বা বৃষ্টির মধ্যে এসব গর্ত চোখে পড়ছে না, ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যাচ্ছে। গত ২৮ মে এই রাস্তায় চলাকালীন একটি অটোরিকশা উল্টে যায়। অটোরিকশা উল্টে একজন মহিলা তার দুই বাচ্চাসহ সামান্য আঘাত পেলেও বড় দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যান সেদিন যাত্রীরা। এমনকি দুর্ঘটনার কথা চিন্তা করে প্রয়োজনে শাহপরান হল থেকে মুজতবা আলী হলে অটোরিকশা যাতায়াত করতে অপারগতা প্রকাশ করেন চালকরাও। ফলে শারীরিকভাবে অক্ষম অনেক শিক্ষার্থীকে বাধ্য হয়েই হেঁটে যেতে হয় অনেকটা পথ।
এছাড়াও, শাহপরাণ হল থেকে গোল চত্বর পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ রাস্তাটিরও দীর্ঘদিন বেহাল দশা। রাস্তা ভেঙে গর্ত তৈরি হওয়ার ফলে বৃষ্টি হলেই দুর্ঘটনা ঘটছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রশাসন রাস্তা মেরামতের কাজটি সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) দোহাই দিয়ে পার করে দিয়েছেন দীর্ঘ কয়েকবছর। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ রাস্তাগুলোর এই করুণ অবস্থা শুধু জনভোগান্তির কারণ নয়, এটি বিগত প্রশাসনের গাফিলতিরও প্রকৃষ্ট উদাহরণ বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। তবে গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয় নতুন প্রশাসন শিক্ষার্থীদের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে দাবিও জানিয়েছেন তারা।
রাস্তা সংস্কারের দাবি জানিয়ে শাবিপ্রবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ভয়েস ফর জাস্টিস'র সভাপতি মো. মমিনুর রশিদ শুভ বলেন, 'সৈয়দ মুজতবা আলী হলে যাওয়ার প্রধান সড়কটি বর্তমানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। প্রতিনিয়তই এই রাস্তায় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। বিশেষ করে বর্ষাকালে রাস্তায় জমে থাকা পানিতে গভীর গর্তের কারণে অটোরিকশা উল্টে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে প্রায় প্রতিদিনই। এছাড়া, গ্রীষ্মকালে রাস্তার পাশে কোনো গাছপালা না থাকায় প্রচণ্ড রোদে চলাচল করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। এই রাস্তায় চলাচলের সময় শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ ও নিরাপত্তাহীনতা চরমে পৌঁছেছে।'
তিনি আরও বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আমাদের দাবি, দ্রুত এই রাস্তা সংস্কার করে প্রয়োজনীয় উন্নয়নমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক, যাতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা নিরাপদ ও স্বস্তিতে চলাচল করতে পারেন।'
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম বলেন, 'আমরা সিলেট সিটি করপোরেশনকে অনুরোধ করেছি ঈদের বন্ধের মধ্যেই রাস্তার কাজ করার জন্য। সিসিকের প্রকৌশলী এসে রাস্তা দেখে গেছেন। আমরা আবারও যোগাযোগ করবো যেন রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করা হয়।'