ইউনানি আর্য়ুবেদিক ও হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা ২৭ জুন, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

ইউনানি আর্য়ুবেদিক ও হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা
ইউনানি আর্য়ুবেদিক ও হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা © সংগৃহীত

২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষে ইউনানি, আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক (BUMS, BAMS, BHMS) কোর্সে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। আজ রবিবার (১ জুন) থেকে আবেদন শুরু হয়ে চলবে ১৭ জুন পর্যন্ত। ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৭ জুন থেকে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ভর্তি সংক্রান্ত নির্দেশনা ও বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়।

২০২৪–২০২৫ শিক্ষাবর্ষে বিইউএমএস (BUMS), বিএএমএস (BAMS) এবং বিএইচএমএস (BHMS) কোর্সে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। এই ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে যে সকল সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য তা হলো-সরকারি ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ, সরকারি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ,বেসরকারি রওশন জাহান ইউনানি মেডিকেল কলেজ, লক্ষ্মীপুর; বেসরকারি হামদর্দ ইউনানি মেডিকেল কলেজ, বগুড়া; হামদর্দ ইনস্টিটিউট অব ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিসিন, মুন্সিগঞ্জ; বেসরকারি বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ, জয়কালি মন্দির, ঢাকা। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৪–২০২৫ শিক্ষাবর্ষে BUMS (ব্যাচেলর অব ইউনানি মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি), BAMS (ব্যাচেলর অব আয়ুর্বেদিক মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি) এবং BHMS (ব্যাচেলর অব হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি) কোর্সে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য অনলাইনে আবেদন আহ্বান করা যাচ্ছে। আবেদনকারীদের নির্ধারিত ফরমে এবং নিম্নোক্ত শর্তাবলীর আলোকে আবেদনপত্র জমা দিতে হবে।

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা যারা ২০২১ অথবা ২০২২ সালে এসএসসি/সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন এবং ২০২৩ অথবা ২০২৪ সালে এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞানসহ উত্তীর্ণ হয়েছেন তারা ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষে BUMS, BAMS ও BHMS কোর্সে ভর্তির জন্য আবেদন করার যোগ্য হবেন। তবে ২০২১ সালের পূর্বে যারা এসএসসি/সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তারা এই ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন না।

আবেদনকারীদের এসএসসি ও এইচএসসি—দুই পরীক্ষায় মোট মিলে ন্যূনতম জিপিএ ৮.০০ থাকতে হবে। তবে কোনো একক পরীক্ষায় জিপিএ ৩.৫০-এর কম হলে তিনি আবেদন করার যোগ্য হবেন না। উপজাতি প্রার্থীদের জন্য এই যোগ্যতা কিছুটা শিথিলযোগ্য। তাদের ক্ষেত্রে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় মোট ন্যূনতম জিপিএ ৭.০০ থাকতে হবে। তবে কোনো একক পরীক্ষায় জিপিএ ৩.০০-এর নিচে হলে আবেদন করা যাবে না।

সকল আবেদনকারীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো—এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় জীববিজ্ঞান (Biology) বিষয়ে অবশ্যই ন্যূনতম জিপিএ ৩.৫০ থাকতে হবে। জীববিজ্ঞান বিষয়ে এই শর্ত পূরণ না করলে ভর্তির আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না।

অনলাইনে আবেদন শুরু ও শেষের তারিখ
১ জুন সকাল ১০টা থেকে শুরু, চলবে ১৭ জুন রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত। আর অনলাইনে আবেদনের ফি জমাদানের শেষ তারিখ ১৮ জুন রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত।

প্রবেশপত্র ডাউনলোড ও  ভর্তি পরীক্ষা
ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র আগামী ২৫ থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত ডাউনলোড করা যাবে। আর ২৭  জুন বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

অনলাইন ফরম পূরণের নিয়মাবলি এবং ভর্তি-সংক্রান্ত অন্যান্য বিস্তারিত তথ্য http://dgme.teletalk.com.bd ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। পাশাপাশি, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট (www.dgme.gov.bd) এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট (www.dghs.gov.bd) থেকেও প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা, তথ্যাবলি ও সংশ্লিষ্ট নোটিশ জানা যাবে। এছাড়া, সরকারি ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ এবং সরকারি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের দপ্তরেও ভর্তি-সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য সরাসরি পাওয়া যাবে।

ভর্তি পরীক্ষায় মোট ১০০ নম্বরের ১০০টি এমসিকিউ (MCQ) প্রশ্ন থাকবে এবং এই লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১ ঘণ্টার মধ্যে। বিষয়ভিত্তিক নম্বর বণ্টন হবে নিম্নরূপ: জীববিজ্ঞান–৩০, রসায়ন–২৫, পদার্থবিজ্ঞান–২০, ইংরেজি–১৫ এবং সাধারণ জ্ঞান–১০।

লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের ন্যূনতম ৪০ নম্বর অর্জন করতে হবে; এর কম নম্বর প্রাপ্ত প্রার্থীরা অকৃতকার্য হিসেবে বিবেচিত হবেন এবং ভর্তির জন্য যোগ্য বলে গণ্য হবেন না।

আরও পড়ুন: সরকারি-বেসরকারি মেডিকেলের প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরুর তারিখ ঘোষণা

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এসএসসি/সমমান ও এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএকে মোট ১০০ নম্বরের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে। এর মধ্যে এসএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ×১০= সর্বোচ্চ ৫০ নম্বর এবং এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ×১০=সর্বোচ্চ ৫০ নম্বর হিসেবে গণ্য করা হবে। ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষায় ন্যূনতম ৪০ নম্বর পেতে হবে। যেসব প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় ৪০ বা তার বেশি নম্বর অর্জন করবেন, শুধু তাদের লিখিত পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বর এবং জিপিএ-এর সমন্বয়ে মেধাতালিকা প্রস্তুত করা হবে।

অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণের পূর্বে www.dgme.gov.bd এবং www.dghs.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নির্দেশিকা ভালোভাবে পড়ে, বুঝে এবং অনুসরণ করে আবেদন করতে হবে। আবেদন ফি ১ হাজার টাকা শুধুমাত্র প্রিপেইড টেলিটক সংযোগ ব্যবহার করে জমা দিতে হবে। আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই, লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন ও ফলাফল প্রকাশসহ সার্বিক প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা হবে।

বিদেশি শিক্ষা কার্যক্রমে এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরা (যদি কেউ থাকে) ভর্তির আবেদন করতে পারবেন। তবে তার আগে বাংলাদেশে প্রচলিত জিপিএ স্কেলে মার্কস রূপান্তর করে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে Equivalence Certificate (সমমান সনদ) সংগ্রহ করতে হবে। সমমান সনদ পাওয়ার পর প্রার্থীরা প্রাপ্ত আইডি নম্বর ব্যবহার করে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।

এই ক্ষেত্রে আবেদনকারীদেরকে পরিচালক, চিকিৎসা শিক্ষা, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর, মহাখালী, ঢাকা বরাবর আবেদন করতে হবে এবং সেই সঙ্গে ২০০০ টাকার ব্যাংক ড্রাফ্ট বা পে-অর্ডার সংযুক্ত করতে হবে। নির্ধারিত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর প্রার্থীকে Equivalence Certificate প্রদান করা হবে এবং একটি আইডি নম্বর দেওয়া হবে যা অনলাইন আবেদনপত্র পূরণের সময় ব্যবহারযোগ্য হবে।

আরও পড়ুন: সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হলো ৩৫ ঊর্ধ্বদের নিয়ে মন্ত্রণালয়ের সভা

তবে বেসরকারি বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজে বিএইচএমএস (BHMS) কোর্সে ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীদের জন্য ৫০টি আসন সংরক্ষিত আছে। এ সংরক্ষিত আসনের আওতায় আবেদন করতে ইচ্ছুক ডিপ্লোমা উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের অবশ্যই ২৭ মে থেকে ৩ জুনের মধ্যে এসএসসি পরীক্ষার মার্কশিট, ডিপ্লোমা পাশের চূড়ান্ত পর্বের মার্কশিট এবং ডিপ্লোমা সনদের সত্যায়িত কপি সরাসরি স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক, চিকিৎসা শিক্ষা-এর দপ্তরে জমা দিতে হবে। এসব তথ্য জমা দিয়ে শিক্ষার্থীদের আইডি নম্বর সংগ্রহ করতে হবে যা অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষার আবেদনপত্র পূরণের সময় অবশ্যই প্রয়োজনীয় হবে।

উল্লেখ্য, আইডি নম্বর সংগ্রহ না করলে ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে পারবেন না। ভর্তি পরীক্ষার আইডি নম্বর প্রদান এবং ডিপ্লোমা কোর্সের নম্বর সমতাকরণের জন্য ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ২০০০ টাকা। এই অর্থ পরিচালক, চিকিৎসা শিক্ষা, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর, মহাখালী, ঢাকা বরাবর ব্যাংক ড্রাফট বা পে-অর্ডার আকারে জমা দিয়ে আবেদন করতে হবে।

তবে নির্বাচিত প্রার্থীদের দেওয়া তথ্য যদি অসম্পূর্ণ বা ভুল প্রমাণিত হয়, তাহলে তাদের ভর্তি বাতিল বলে গণ্য হবে। ভর্তি সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত ও অপরিবর্তনীয় হিসেবে বিবেচিত হবে।