কুয়েটের ২ শিক্ষার্থীর ওপর দুর্বৃত্তের হামলা— এ কাজ গুপ্ত সংগঠনের, বলছে ছাত্রদল

আহত শিক্ষার্থী
আহত শিক্ষার্থী © টিডিসি সম্পাদিত

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ মঙ্গলবার (২৭ মে) কুয়েট সড়কের নিরিবিলি রেস্তোরাঁর সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সাফওয়ান আহমেদ ইফাজ (২২)। তিনি নগরীর টুটপাড়া মোল্লা এলাকার বাসিন্দা মহসিন জমাদ্দারের ছেলে এবং অপরজন এনার্জি সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মোহাম্মদ আলসাত রাজিম (২২)। ছাত্রদল বলছে, গুপ্ত সংগঠনের কর্মীরা এ হামলায় জড়িত। এর আগেও ইফাজদের ওপর পরিকল্পিত হামলা হয়েছিল কুয়েটে।

জানা যায়, আহত দুই শিক্ষার্থী কুয়েট রোডে নিরিবিলি রেস্তোরাঁর সামনে অবস্থান করছিলেন। বিকেল পৌনে ৪টার দিকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত এসে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলার সময় তাদের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ইফাজের বাঁ হাতে আঘাত করে এবং তার সঙ্গে থাকা রাজিমকে কিলঘুষি মেরে আহত করে। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেন।

আহত শিক্ষার্থী সাফওয়ান আহমেদ ইফাজ বলেন, যারা আমাদের মেরে আহত করেছে, তাদের আমরা চিনি না। আর আমাদের ওপর কেন এ হামলা, তার হিসাব করতে পারছি না।

এ বিষয়ে খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, এ রকম ঘটনা শুনেছি। কোথায় এ হামলা হয়েছে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। তবে কুয়েট এলাকায় গিয়ে খবর নিচ্ছি।

এদিকে আহত দুই শিক্ষার্থী কুয়েট শাখা ছাত্রদলের কর্মী বলে দাবি করা হয়েছে। তাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল বুধবার (২৮ মে) বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দিয়েছে মহানগর ছাত্রদল। রাত ১০টার দিকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলছে, কুয়েটের মেধাবী ছাত্র ইফাজকে কুয়েটের প্রধান গেটসংলগ্ন স্থানে বন্ধুর সাথে চা খাওয়া অবস্থায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করেছে গুপ্ত সংগঠনের কর্মীরা। ইতঃপূর্বেও আমরা দেখেছি, সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তার পাশ দিয়ে একটি লাইন করে চলে যাওয়ার সময়েও ইফাজদের ওপর পরিকল্পিত হামলা হয়েছিল কুয়েটে। বাংলাদেশের বহু ক্যাম্পাসে পরিচয় গোপন করে এই গুপ্ত কর্মীরা দখল ও আধিপত্য বিস্তার করেছে। কুয়েটের সদ্য সাবেক উপাচার্যকে এরাই শারীরিকভাবে হামলা ও হেনস্তা করেছে। ৫ আগস্টের পর ছাত্ররাজনীতিতেও পরিবর্তন ও সংস্কারের যে জনআকাঙ্খা, শুধুমাত্র এই গুপ্তদের কারণে তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। পুরো দেশের ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে তারা মব সন্ত্রাস ছড়িয়ে দিয়েছে।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ৫ আগস্টের পর ছাত্রদল সর্বোচ্চ ধৈর্য ও আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এই বিষয়টিকে অনেকে দুর্বলতা ভাবছে। যদি প্রয়োজন হয়, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে হত্যা ও গুপ্ত হামলার সমুচিত জবাব দিবে।