শাবিপ্রবিতে আঞ্চলিক কমিটির পদ-পদবি নিয়ে মারামারি, আহত ৩

শাবিপ্রবি ক্যাম্পাস
শাবিপ্রবি ক্যাম্পাস © সংগৃহীত

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) জেলাভিত্তিক আঞ্চলিক সংগঠন 'সুনামগঞ্জ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন'-এর নতুন কমিটি গঠনের পর পদ-পদবি নিয়ে দ্বন্দ্বে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। সোমবার (২৬ মে) বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন তপোবন আবাসিক এলাকার একটি মেসে এ ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। 

আঞ্চলিক সমিতির কমিটিতে সভাপতি পদ না পাওয়ায় আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সোহান শাহ এর বিরুদ্ধে। এসময় মারধরের প্রতিবাদ জানালে শাকিল হাওলাদার নামের এক শিক্ষার্থীকে ইট দিয়ে আঘাত করে হাত থেতলে দেওয়া হয়। 

এ ঘটনায় তিনজন আহত হয়। আহতরা হলেন- শাবিপ্রবির পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোবাশ্বির হাসান ও একই বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাকিল হাওলাদার। তারা উভয়েই সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। অপরদিকে একই ঘটনায় আহত আরেকজন গণিত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সোহান শাহ। জানা যায় তিনিও এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। 

আরও পড়ুন: গবেষণায় ১ হাজার ২২৪ কোটি টাকা পাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল দুপুরে সুনামগঞ্জ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নতুন কমিটি দেওয়া হয়েছে। এতে সহ-সভাপতির পদ পেয়েছেন সোহান শাহ। সভাপতির পদ না দেওয়ায় সংগঠনটির সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোবাশ্বির হাসানের সঙ্গে সোহান শাহ-এর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এর জেরে একপর্যায়ে সোহান শাহ ও তার ব্যাচমেট কয়েকজন মোবাশ্বির হাসানকে মারধর করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পরবর্তীতে মোবাশ্বির হাসানের দুইজন জুনিয়র এসে এর প্রতিবাদ জানালে সোহান শাহ ইটের আঘাত দিয়ে শাকিল হাওলাদারের হাত থেতলে দেয়। এসময় দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। খবর পেয়ে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোবাশ্বির আহমদ বলেন, 'দুপুরে কমিটি ঘোষণার পর মেসে আমার রুমে এসে তর্কাতর্কি শুরু করে সোহান। তাকে কেনো সভাপতি করা হয়নি সেজন্য এক পর্যায়ে আমার গায়ে হাত তোলে। তার দুই ব্যাচমেটকে নিয়ে আমাকে মারধর করে। পরবর্তীতে আমার দুইজন জুনিয়র কেন মারধর করেছে এর কারণ জানতে চাইলে সে তাদেরকেও ইট দিয়ে আঘাত করে। এতে একজনের হাতের গুরুতর আঘাত লাগে। পরে প্রক্টরিয়াল বডি গিয়ে আমাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।'  

আরও পড়ুন: সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ শিগগিরই, কমতে পারে আসন

এ বিষয়ে মোস্তাক আহমদ বলেন, 'আমাদের অ্যাসোসিয়েশনের কমিটি প্রকাশ হওয়ার পর দরকারে আমি মোবাশ্বির ভাইয়ে রুমে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি শাকিল ভাই ও মোবাশ্বির ভাই বসা। কি হইছে-তাদের কাছে জানতে চাইলে জানান, সোহান শাহকে কমিটিতে সভাপতি হিসেবে দেওয়া হয়নি বলে সে (সোহান) তার দুই বন্ধুসহ মোবাশ্বির ভাইয়ের রুমে গিয়ে মারধর করছে। সোহান শাহকে এটা জিজ্ঞেস করতে গেলে তিনি শাকিল ভাই ও আমার ওপর আক্রমণ করে। আমাদেরকে ৪ থেকে ৫টি ইট ছুড়ে মারে। আমার গায়ে লাগছে। শাকিল ভাইয়ের হাতে গুরুতরভাবে লাগছে, তার হাত থেতলে গেছে। মোবাশ্বির ভাইকে মারার জন্য সোহান আগে থেকেই রুমে ইট এনে রাখছিল।’  

এ বিষয়ে সোহান শাহ বলেন, 'কমিটি গঠন নিয়ে মোবাশ্বিরের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। আমি অভিযোগ করি, তিনি ছাত্রলীগের রানিং ছেলেদের দিয়ে কমিটি করেছেন। একপর্যায়ে তিনি ও শাকিলসহ প্রায় ২০-২৫ জন আমার ওপর হামলা চালান।' 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক বেলাল হোসেন শিকদার বলেন, 'ঘটনার খবর পেয়ে আমরা অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাই। আহত শাকিলের হাতে গুরুতর জখম হয়েছে। চিকিৎসা চলমান আছে। চিকিৎসা শেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করবেন।'